করোনার ভ্যাক্সিন আর এন্টিভাইরাল ঔষধ নিয়ে ভুল ধারনা
করোনার ভ্যাক্সিন আর করোনার এন্টিভাইরাল ঔষধ নিয়ে চিকিৎসক ছাড়া অন্যদের মাঝে স্পস্ট ধারনা না থাকারই কথা। অনেকেই ভেবে নিয়েছেন যে বাংলাদেশে যে Favipiravir ঔষধটি নিয়ে সরকারী নির্দেশে ট্রায়ালের কার্যক্রম চলছে সেটা বোধহয় করোনার ভ্যাক্সিন।
নিচের লেখাটা পড়লে ধারনা অনেকটাই ক্লিয়ার হবে বলে আশা করা যায়:-
[]ভ্যাক্সিন :- ভ্যাক্সিন মানে হলো টীকা।টীকা দেয়া মানে হলো, টীকা দিলে আপনার শরীর আগে থেকেই নির্দিষ্ট কোন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরী করে রাখে।যেন রোগটি শরীরে প্রবেশ করতে না পারে। অর্থাৎ এডভান্স প্রটেকশন।
যেমন-হাম, পলিও,টিটেনাস ইত্যাদির টীকা।
[]এন্টিমাক্রোবিয়াল ঔষধ:- এন্টিমাইক্রোবিয়াল ঔষধ হলো জীবাণু নিবারক/নাশক ঔষধ যা শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে রোগ তৈরী করার পর ব্যাবহার করা হয়।যেমন-এন্টিবায়োটিক, এন্টিভাইরাল,এন্টি ফাংগাল, এন্টি প্রটোজোয়াল।
এক্ষেত্রে প্রথমে জীবানু শরীরে প্রবেশ করে রোগ তৈরী করে।তারপর মানুষ নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর যে ঔষধগুলি ব্যাবহার করে রোগ জীবণুকে বিনাশ করে রোগ সাড়ানো হয় তাকে এন্টিমাক্রোবিয়াল ঔষধ বলা হয়।
#সহজ ভাষায় ,
>টীকা দিলে জীবাণুটি শরীরে ঢুকে রোগ তৈরী করতে পারে না।
>আর শরীরে জীবাণু ঢুকে রোগ তৈরী করার পর সেই জীবাণুটি মারার জন্য যে ঔষধ ব্যবহার করা হয় তাকে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ড্রাগ বলে।এই হলো পার্থক্য।
#করোনা ভাইরাসের টীকা আবিস্কৃত হয়নি।
কিন্তু কিছু কিছু এন্টিমাইক্রোবিয়াল/এন্টিভাইরাল ঔষধ দিয়ে আক্রান্ত শরীরে জীবানুটির সংক্রমন বন্ধ করা যায় কিনা সেই ট্রায়াল চলছে।
Remdesivir আর Favipiravir হলো সেই ধরনের এন্টিমাইক্রোবিয়াল/এন্টিভাইরাল ঔষুধ যা করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় কাজে লাগানোর জন্য জাপান, বাংলাদেশ, আমেরিকা সহ আরো অনেক দেশেই ট্রায়াল চলছে ।
# মনে রাখবেন, Remdesivir আর Favipiravir কোন টীকা নয়।
আর যেকোন ঔষধের ট্রায়াল সম্পূর্ন ভাবে সফল না হওয়া পর্যন্ত একে কোন নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসায় যথাযত ঔষধ বলে প্রচার ও বিপনন করা অযৌক্তিক ও অনৈতিক।
তবে বিজ্ঞানীরা করোনার টীকা আবিষ্কারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।ধারনা করা হচ্ছে খুব শীগ্রই সুখবর আসবে।
আশা করি বিষয়টা সর্বসাধারনের বুঝতে সুবিধা হবে এবার।
ডা:রনক
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট,
ঢাকা, বাংলাদেশ।
01924642670
১২/০৪/২০২০
চমৎকার তথ্য বহুল লেখা