মহা’মারি নভেল করোনাভাইরাস যখন ভারতে প্রথম থাবা বসাচ্ছে, তখন বহু করোনা রোগীকে চিহ্নিতই করা যায়নি, এমনটাই বলছেন ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রথমে ধরেই নেওয়া হয়েছিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানেই রোগীর শরীরে প্রথম উপসর্গ হবে জ্ব’র। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, বহু
কোভিড-১৯ রোগীর ক্ষেত্রে জ্বরের উপসর্গ ছিলই না। ভারতের অল ইন্ডি’য়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এআইআইএমএস বা এইমস) একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮।ওই ১৪৪ জন রোগীর মধ্যে ৯৩ দশমিক ১ শতাংশ ছিল পুরুষ। তাদের মধ্যে ১০ শতাংশ ছিলেন বিদেশি পর্য’টক। তাঁদের ২৩ জন কোমরবিডিটিতে আক্রান্ত হন। যাঁদের শরীরে উপসর্গ ছিল, তাঁদের মধ্যে
একটা অংশ সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন। তাঁদের জ্বর প্রায় ছিল না বললেই চলে। তাঁদের ওপর হাইড্র’ক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রয়োগ করেন চিকিৎসকরা।চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত এইমসের গবষণায় দেখা যায়, ভারতের কোভিড-১৯ রোগীদের প্রধান উপসর্গের স’ঙ্গে অন্যান্য দেশের করোনা রোগীদের উপসর্গের পার্থক্য রয়েছে। চীনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৪৪ শতাংশের শরীরেই
জ্বর ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর জ্ব’র দেখা দেয় ৮৮ শতাংশের শরীরেই। কিন্তু ভারতের এইমসে ভর্তি হওয়া মোট করোনা রোগীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ রোগীর শরীরে জ্বর ছিল। আর ৪৪ শতাংশ রোগী ছিলেন উপসর্গহীন।এ উপস’র্গহীনতার পরিসংখ্যান দেখে মনে করা হচ্ছে, অনেকের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে নিজ থেকে, অন্যদিকে এ উপসর্গহীন রোগীরাই
বহু ক্ষেত্রে অজান্তে সংক্র’মণ ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের অনুমান, ভারতে গত মার্চ-এপ্রিলে এভাবেই সংক্রমিত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।চিকিৎসক রণদীপ গু’লেরিয়া বলেন, ‘আসলে প্রতিটি দিনই একটা করে শিক্ষার দিন। করোনা আমাদের চিন্তার চেয়েও বেশি পরিকল্পিত আক্রমণ চালায়। এমনও হয়েছে কারো স্ট্রোক হয়েছে বা হার্ট অ্যাটাক, পরে ধরা পড়েছে তিনি করোনায় আ’ক্রান্ত। এমনও হয়েছে কনজেনটিভাইটিসে আক্রান্ত রোগীর শরীরে করোনা লুকিয়ে ছিল।’