নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের গাইটাল আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে বিভিন্ন বাস সার্ভিসের কাউন্টারে এবং বাসের ভিতরে দেখলে মনে হবে না দেশে মহামারি চলছে। মানুষের মধ্যে অসচেতনতা এখানে প্রকট। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের কোনো তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনের সামনেই চলছে অনিয়মের ছড়াছড়ি।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়। স্থিরচিত্রে দেখা যায়, টিকেট কাউন্টারে গাদাগাদি অবস্থায় টিকেট সংগ্রহ করা হচ্ছে। যাত্রীর হাত ধরে টানা হেচড়া করছে কাউন্টারের ভোকালরা। এমন অবস্থায় সাধারণ যাত্রীগণ অসহায় হয়ে পড়ছে। অসহায় দরিদ্র হাওরের কর্মহীন মানুষ জীবনের তোয়াক্কা না করেই এসব বাসে চড়ছেন চড়ামূল্যে। দুটি সিটে একটি সিট ব্যবহার করবে বলে বাস ভাড়া ৬০% বৃদ্ধি করা হলেও মালিক ও শ্রমিকদের অদৃশ্য যোগসাজসে কোনো সীট খালি রাখা হচ্ছে না এমনকি বাসের মাঝখানের ফাঁকা জায়গাতেও যাত্রী তোলা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কায়ছার আহমেদ কাইয়ুম ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম এর সাথে কথা বলে জানা যায়, মালিকদের চাপে পড়ে শ্রমিকদের এক প্রকার বাধ্য হয়েই বাস চালাতে হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সদস্য-সচিব শেখ ফরিদ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জ গাইটাল আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের অনন্যা সুপারের ইনচার্জ ও জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, অনন্যা সুপার সার্ভিসে ৪০ সিটের বিপরীতে ২০ জনের বেশি যাত্রী তোলা হয় না। তবে টার্মিনালের অন্যান্য সার্ভিসের বিষয়ে আমি বলতে পারছি না।
গত সোমবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শ্রমিকের একটি অংশে কালামের নেতৃত্বে হঠাৎ করে টার্মিনালের কাউন্টার পরিবর্তন নিয়ে হট্টগোল তৈরী হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ২ শতাধিক শ্রমিকদের নিয়ে বিশৃংখলার পরিবেশ সৃষ্টি হলে মডেল থানার পুলিশ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
মালিক পক্ষের একজন জানান, এ ঘটনার পুণরাবৃত্তির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বের সার্ভিস যথাক্রমে অনন্যা সুপার (ভৈরব রোড), যাতায়াত (প্রাঃ) লিমিটেড (ভৈরব রোড), অনন্যা ক্লাসিক (কাপাসিয়া রোড), অনন্যা পরিবহন (কাপাসিয়া রোড) বর্তমানে নতুন সার্ভিস যাতায়াত পরিবহন (ভৈরব রোড) নামে নতুন সার্ভিসটি শ্রমিক ইউনিয়ন ভবনের সামনে থেকে পরিচালিত হয়ে আসছিল। হঠাৎ তারা ৪টি কাউন্টার থেকে ১টি কাউন্টার করার জন্য চেষ্টা করলে এই বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে মালিক ও শ্রমিকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
একজন বাস যাত্রী জানান, মালিক শ্রমিকদের এই হীনমন্যতার কারণে আমাদের যাতায়াতে অনেক ধরণের অসুবিধা তৈরী হচ্ছে। বর্তমানে অভিযোগের কোন সঠিক পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনিকভাবে তথ্য সেল তৈরী হলে সাধারণ মানুষ তা থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারে। অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে শর্ত পূরণ করে যাত্রী উঠানামা করা আমাদের একমাত্র দাবী।