ইসলাম ডেস্ক : নামাজের মাধ্যমে মুসলমানরা দিনের মধ্যে পাঁচবার আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর’্পণ করেন। নিজের কৃত পাপ কাজের জন্যে ক্ষ’মা চান, জগতের সব সৃষ্টির কৃত পাপের জন্যে ক্ষ’মা চান। সহজ সরল সঠিক পথে পরিচালনার জন্যে প্রতি রাকাতে, প্রতি সিজদায় আল্লাহর সাহায্য চান, প্রতিজ্ঞাব’দ্ধ হন। একাগ্রচিত্তে
নামাজ যেমন মন মননকে পরিশু’দ্ধ করে তেমনি দে’হকেও করে পবিত্র, শু’দ্ধ, কর্মচঞ্চল। দিনের পাঁচটি সময়ের আ’দায় করলে আরো বেশি রাকাতের মাধ্যমে নামাজ আ’দায় করতে হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দে’হে এবং কাপড়ে প্রত্যেক নামাজের আগে অজু করে নেয়া বাধ্যতামূলক। সে ওজুর পানিটিও ‘হতে হয় পরিষ্কার,
পরিচ্ছন্ন পবিত্র। নাক, মুখ কান চুল হাত পা সবই ওজুর সময় পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হয়, মুছে নিতে হয়। দিনের মধ্যে এভাবে বারবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দে’হে, নিভৃতে একাগ্রচিত্তে সৃষ্টিক’র্তার কাছে আ’ত্মসমর’্পণ করা একমাত্র ইসলাম ধ’র্মেই আছে। নামাজের সময় প্রত্যেক রাকাতের সময় হাত বাঁধা ছাড়াও দাঁড়ানো, বসা, রুকুতে যাওয়া, সিজদায় যাওয়া, সালাম ফেরানো, ইত্যাদি মোট ৭ থেকে ৯ রকমের শারিরীক অ’ঙ্গভ’ঙ্গিতে প্রতিবার নির্দিষ্ট সময় নিয়ে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এই অ’ঙ্গবিন্যাসে অবস্থান সব সুস্থ মানুষের জন্যে একটা নির্দিষ্ট নিয়মে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে একইভাবে। ধৈর্য
ধরতে সহকারে নিরবে নিভৃতে নামাজ আ’দায়ের সময় মানবদে’হের প্রতিটি জোড়ার মাংসপেশির সুষম সংকোচন ও প্রসারণ হয়। এজন্যই বলা হয় নামাজ দে’হের জন্যে প্রয়োজনীয় সর্বোত্তম শরীর চর্চা যোগ ব্যায়াম। একজন মানুষ যদি দিনে পাঁচবার সালাত আ’দায়
করে, তাহলে শরীরকে সুস্থ রাখতে তার আর আলাদাভাবে শরীর চর্চা করার দরকার হয় না। দে’হকে সুস্থ সবল রাখতে, দে’হের ইমিউনিটিকে সুদৃঢ় রাখতে শরীর চর্চা বাধ্যতামূলক। একজন মুসলমান প্রতিদিন একাগ্র’চিত্তে দুই রাকাত নামাজের সময় মোট ১৪ বার বিভিন্ন শারীরিক বিন্যাসে থেকে নামাজ আ’দায় করতে হয়। সে হিসে’বে তাঁকে একাগ্রচিত্তে প্রতিদিন ১১৯ বার, মাসে ৩৭৫০ বার এবং বছরে ৪২ হাজার ৮৪০ বার
শরীরকে বিভিন্ন অ’ঙ্গবিন্যাসে থেকে সালাত আ’দায় করে নিতে হয়। যা আমা’দের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটিকে বাড়িয়ে দেয় অনেক গু’ণ। যদি একজন মুস’লমান গড়ে ৫০ বছর বাঁচেন এবং তিনি যদি ১০ বছর বয়স থেকে শুধু বাধ্যতামূলক সালাত গু’লো আ’দায় করা করেন তাহলে দেখা যায় তাকে সারাজীবনে মোট ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬ শ’তবার শরীরটাকে নির্দি’ষ্ট কিছু
অ’ঙ্গবিন্যাসে রেখে, নির্দি’ষ্ট কিছু সময় নিয়ে অবস্থান করতে হয় যা পৃথিবীর সেরা শরীর চর্চার অন্যতম হিসেবে পরিগনিত। নামাজে সিজদার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয় আমা’দের দে’হের ফুসফুস। কারণ এ অবস্থানে ফুসফুস দে’হের জন্যে প্রয়োজনীয় সবচেয়ে বেশী র’ক্ত স’ঙ্গে অক্সিজেনের সমন্বয় ঘটাতে পারে। র’ক্তে অক্সিজেন সেচুরেশন বৃ’দ্ধি পায়। এজন্য দেখা যায় আইসিইউ’তে কোমায় থাকা রোগীর অক্সিজেন
স্যাচু’রেশন অবনতি ঘটলে তার র’ক্তের অক্সিজেন বাড়াতে রোগীকে অনেকটা সিজদার মতো পজিশনে রাখা হয়। একে বলে প্রো’নিং। একজন মুসলিমের প্রতিদিনের এই নামাজ আ’দায়ে একজন মানুষের ৮০ কিলো ক্যালরি শক্তি ব্যয় হয়। করো’নাভাইরাস প্রতিরোধে শুরু থেকেই সারা বিশ্বের সব চিকিৎসা গবেষকরা একটা পরামর’্শই বারবার দিয়ে আসছেন যা হলো পরি’ষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা,
বারবার হাত ধোয়া এবং ইমিউনিটি বাড়াতে নিয়মিত শরীর চর্চা ও শু’দ্ধাচার অবলম্বন করা। রাব্বুল আ’লামীন বিশ্বের সবাইকে করো’নাভাইরাস থেকে মুক্ত রা খু’ন। আমীন। লেখক: ডা. সাঈদ এনাম সহকারী অধ্যাপক, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ