এজি লাভলু, স্টাফ রিপোর্টার:
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় শরীয়ত উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাঁঠাল ও মেহগনি গাছ এবং পুরনো একটি ভবনের ইট ও লোহা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক সদস্য ও নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে।
উক্ত ঘটনায় ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ৫ মার্চ লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ওই স্কুলটির একটি নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার হয়। এতে কর্তৃপক্ষ স্কুলের কাঁঠাল গাছ, মেহগনি গাছ, শিশব গাছ সহ ১৫টি বড় গাছ কেটে ফেলেন তার সাথে একটি ৪ কক্ষবিশিষ্ট পুরনো ভবন ভেঙে ফেলা হয়। পরে সেগুলো ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জালাল মন্ডল, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, পরিচালনা কমিটির সদস্য উমর আলী, নৈশ প্রহরী কুতুব উদ্দিন মিলে আত্মসাৎ করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, স্কুলটির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য স্কুলের ৪ কক্ষবিশিষ্ট পুরনো একটি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভবনের ইট, টিন, লোহার পাত কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই স্কুল প্রাঙ্গণে। এলাকাবাসী জানান, ৫ ট্রলি ইট উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জালাল মন্ডল ভুরুঙ্গামারী সদরে তার বাড়িতে নিয়ে যান। বাকি ইট বিদ্যালয়টির সাবেক সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরী মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। টিন এবং লোহার পাতের কোনো হদিস মেলেনি।
ওষুধ কোম্পানির ছোট একটি প্যাডের কাগজে স্বাক্ষর এবং সীলমোহর দিয়ে একটি মরা গাছসহ কয়েকটি গাছ কাটার অনুমতি দেন উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জালাল মন্ডল। এই অনুমতির বলে বিদ্যালয়ের গাছ কেটে বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নেন প্রধান শিক্ষকসহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এক সদস্য।
স্কুলের আশেপাশের লোকজন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসব কাজ করা হয়েছে। যে গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছে তার বাজার মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। আর পুরনো ভবনের ইট ও লোহার দাম ৩ লাখ টাকার মতো।
উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, সব কিছু উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জালাল মন্ডলের নির্দেশে করা হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জালাল মন্ডল জানান, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো বিক্রি করা হয়নি তবে সেগুলো স্থানীয় বিভিন্ন করাতকলে রাখা হয়েছে। তিনি বিদ্যালয়ের ইট নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় বর্মণ জানান, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গাছ কাটার লিখিত কিংবা মৌখিক অনুমতি কেউ নেননি। বিষয়টি আমরা জেনেছি, তদন্ত কওে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।