১৯৭৮ সা’লে স্ত্রী বি’খ্যাত মডেল ভেরোনিকা পরশে, মেয়ে লায়লা আলী, ভাই, বাবা ও মাকে নিয়ে বাং’লাদেশে এসেছিলেন ক্রীড়ার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জ’নপ্রিয় বক্সার মোহাম্মদ আলী। বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে আলী বলেছিলেন, ‘আমেরিকা থেকে বের করে দিলেও আমার আরেকটা বাড়ি থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে তি’নি ফি’রে গিয়ে বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাকে তা’ড়িয়ে দিলে কি হয়েছে, বাংলাদেশ তো আছে, স্বর্গ দেখতে চাইলে বাংলাদেশে যাও।’
১৯৭৮ সালের ১৯ ফে’ব্রুয়ারি সে’দিন বিমানবন্দরে আলীকে বরণ করতে লাখ লাখ মানুষ ভিড় জমিয়েছিলো। শ’হীদ প্রে’সিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স’রকার মোহাম্মদ আলীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্বও প্রদান করা হয়েছিলো।
কিংবদন্তী ব’ক্সার মোহাম্মদ আলীর তার ক্যারিয়ার এবং কাজের ধারার পরিচয় তৈরি করেছিলেন এ’কজন ধর্মবিশ্বাসী মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে। ক্রী’ড়াজীবনের শুরু থেকেই রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
ইস’লাম গ্রহ’ণের পর আলী আমেরিকান মু’সলিমদের জন্য আদর্শে পরিণত হন।১৯৬৪ সালে ধর্মান্তরিত হওয়ার কয়েক বছর পরই মোহাম্মদ আলী এমন একটি লড়াইয়ে অংশ নেন, যা তাকে উদ্বুদ্ধ করে’ছিল জী’বনের কিছু স্মৃ’তি লিখে রাখতে, কেন তিনি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন সেই কারণ বা ব্যাখ্যাগুলো লিখে রাখতে।
সেই ল’ড়াই কো’নো বক্সিং রিংয়ে হওয়া মুষ্টিযু’দ্ধ ছিল না। ছিল নি’জের ঘরে স্ত্রী বেলিন্ডার সঙ্গে হওয়া বাকযু’দ্ধ। বেলি’ন্ডার অভিযোগ, আলী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছেন। তার মধ্য থেকে মানবিকতা ও বিনয়ের সব চিহ্ন হা’রিয়ে গেছে। তিনি এমন আচরণ করছেন যেন তিনি ঈশ্বর।
‘তুমি নি’জেকে স’র্বশ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতে পারো। কিন্তু তুমি কখনোই আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারবে না,’ বলেন ক্ষু’ব্ধ বেলিন্ডা। একজন স্কুলশিক্ষিকা তার শি’ক্ষার্থীকে যেভা’বে নির্দেশ দেন, বেলিন্ডা ঠিক সেভাবেই আলীকে তখনই বসে একটি প্রবন্ধ লিখতে বলেন, যেখানে তাকে লিখতে হবে কেন তিনি মু’সলিম হয়েছিলেন।
আলী স্ত্রী’র নি’র্দেশ মেনে কয়েক পাতা সাদা কাগজ আর একটা নীল কলম নিয়ে লিখতে শুরু করেন। জীবনীকার জো’নাথান ই’গ বেলিন্ডার (বর্তমানে খলিলাহ কামাচো-আলী) সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে সেই প্রবন্ধ লেখা কাগজগুলো পান।
আমি ধূম’পান ক’রিনা, কিন্তু আমি আমার পকে’টে একটি ম্যাচবক্স রাখি। যখন আমার হৃদয় কুপ্রবৃত্তির কারণে গু’নাহ করতে চায় ,তখন আমি একটি কাঁঠি জ্বা’লাই এবং আমার হাতের তালুর কাছে নিয়ে তাপ দেই ।
এবং আ’মি নি’জেকে জিজ্ঞেস করিঃ ‘আলী তুমি সামান্য এই তাপ সহ্য করতে পারছ না, কিভাবে জাহান্নামের অসহ্য তাপ সহ্য করবে?’’১৯৬৭ সালে ভিয়েতনাম যু’দ্ধে যাওয়ার ডাক এল, কিন্তু তিনি মানবতার পক্ষে থেকে যু’দ্ধে যেতে অস্বীকার করেন। তাকে জে’লে পাঠানো হয়।
তিনি বলে’ছিলেন, ‘আ’মার বিবেক আমাকে ভিয়েতনামের বিপক্ষে লড়াই করতে সায় দেয় না। আর আমি কাদের বিপক্ষে যু’দ্ধ করবো?
তারা ক’খনো আ’মাকে কালো বলে গালি দেয় নি, তারা আমার বাবা-মা’কে হ’ত্যা করেনি। শুধুমাত্র কালো বলে এই দরিদ্র মানুষদের উপর আমি অ’স্ত্র তুলে ধরতে পারি না। আমি আল্লাহ বা নবীর নির্দেশ ছাড়া যু’দ্ধে যাব না।’