হা’সপাতালে খা’বারের ভুয়া বিল: রোগীর তা’লিকায় ক’র্মকর্তা-স্টাফরা!
মোঃমনির মন্ডল, নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার- সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স হাসপাতালে রোগী নেই কোনো। প্রায় সব শয্যাই খালি। তারপরও রোগীদের জন্য আসছে খাবার। সেগুলো খাওয়াও হয়ে যাচ্ছে। খাবারের বিল দেখিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এ’রকম ভুতুড়ে রোগীর দেখা মিলেছে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।এভাবে ভুতুড়ে রোগীদের খাবার সরবরাহ করে ভুয়া বিল বানিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
ক’রোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে তেমন কোনো রোগী না থাকলেও গত কয়েকদিনের খাদ্য তালিকায় ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ৫০ জনই রোগী ভর্তি দেখানো হয়েছে। রোগী হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের কর্মকর্তা, নার্স, স্টাফদের। এ তালিকা থেকে বাদ যায়নি স্বয়ং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদার নামও।
খোঁ’জ নিয়ে জানা গেছে, দেশে মহামারী করোনাভাইরাস প্রাদুুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ রোগী ভর্তি হার অন্য সময়ের তুলনায় অনেক কমে গেছে। তবে আবাসিক বিভাগের রোগীদের খাবার সরবরাহের তালিকায় গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিদিন ৫০ জন করে রোগী ভর্তি দেখানো হয়েছে।একই তারিখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি রোগীদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ওই সময়ের আগে থেকেও ১০ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ১৮ জন।
যা’দের অধিকাংশই সাধারণ দুর্বলতাজনিত কারণে ভর্তি দেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে গড়ে প্রতিদিন তিন থেকে চারজন রোগী ভর্তি হয়েছে। অথচ খাবার সরবরাহের তালিকায় প্রতিদিন ৫০ জন রোগী ভর্তি দেখানো হয়েছে।জানতে চাইলে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সায়েমুল হুদা বলেন, মূলত হাসপাতালের আবাসিক বিভাগে রোগীদের খাবার সরবরাহের বিষয়টি আবাসিক মেডিকেল অফিসার দেখেন।
খা’বারের বিলে তিনি স্বাক্ষর করার পরই আমি সেই বিলে স্বাক্ষর করি। যদি খাবার সরবরাহে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থ্যা গ্রহন করা হবে।অপরদিকে বিষয়টি জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুসরাত জাহান সাথীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
অ’ভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের খাবার সরবরাহে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম করে আসলেও কখনোই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরর সহযোগিতায় এমন অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ চৌধুরীর নিয়ন্ত্রিত খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি।
ঢা’কা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ চৌধুরীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, এমনটি হয়ে থাকলে সেটি অবশ্যই অনিয়ম। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।