অনলাইন ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীর ধর্ষণের পর হত্যার মামলাটি থানা পুলিশের পরিবর্তে পিবিআই অথবা র্যাবকে দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।
পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের উপর অনাস্থা জানিয়ে সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানানো হয়।
গত ১৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার গাংধোয়ারচর গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী। এরপর ভোররাতে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।
তার দুদিন পর স্থানীয় জাহিদ মিয়া (২০), পিয়াস মিয়া (২০), রুমান মিয়া (২১), রাজু মিয়ার (১৮) নাম উল্লেখ করেছ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন ওই তরুণীর মা।
সংবাদ সম্মেলনে ওই শিক্ষার্থীর মামা মুরশিদ মিয়া বলেন, মামলার পর র্যাব চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামিদের একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেন।
“কিন্তু পুলিশ এখন অন্য আসামিকে ধরছে না। উল্টো পুলিশ আমাদের কাছেই আসামিদের তথ্য চাইছে। আমরা পুলিশের উপর আস্থা রাখতে পারছি না। এই অবস্থায় আমরা চাই, মামলাটি পিবিআই বা র্যাব তদন্ত করে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুক।”
আসামির পরিবারের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা।
মুরশদ বলেন, “তারা বলছে, পুলিশ ও হাসপাতালে টাকা দিয়ে তারা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বদলে দিবে। আমরা তাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
পুলিশ বলছেন, এই ঘটনার তদন্তে কেউ পুলিশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে না।
পুলিশ পেশাদারিত্বের সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ওই তরুণীর মা বলেন, পাকুন্দিয়ার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী মো. রুবেলের ছেলে পিয়াস মিয়া নিজের পরিচয় গোপন করে বাড়িতে এসে ‘জাহিদ মিয়া’ পরিচয় দিয়ে তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি এখনই মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হননি।
“পরে রাতে সে টয়লেটে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। রাতে অনেক খোঁজাখুজির পর না পেয়ে ভোররাতে দেখি একটা বরই গাছের সাথে মরদেহ বাঁধা। কিন্তু তার শরীর মাটি স্পর্শ করে আছে।”
তদন্ত কর্মকর্তা শফিকুল বলেন, “মেয়েটি গণধর্ষণের শিকার হয়েছে, এটা অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু সে আত্মহত্যা করেছে, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে আমরা নিশ্চিত হতে পারব।”
মেয়েটির মা বলেন, “হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘গণধর্ষণের পর রিমা আত্মহত্যা করেছে’। কিন্তু তার এই কথা আমরা মানতে পারছি না।
“কারণ যে মেয়ের সারা শরীরে আঘাত, হাত-পায়ে আঘাতের চিহ্ন, সে কীভাবে একটা গাছে উঠে আত্মহত্যা করতে পারে। আসলে ওকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ওই হত্যাকে এখন আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”