আশরাফুল ইসলাম তুষার,কিশোরগঞ্জ:
ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ঐতিহ্য ও মর্যাদা রক্ষার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।শুক্রবার(১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সামনে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ কিশোরগঞ্জ এর আহবায়ক শেখ সেলিম কবির।লিখিত বক্তব্যে শেখ সেলিম কবির বলেন,সারা বিশ্বে সমাদৃত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান, উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঈদ জামাতের স্থান আজকে তার ঐতিহ্য, মর্যাদা বিনষ্ট হওয়ার পথে।মডেল মসজিদ কাম ইসলামিক কালচারাল সেন্টার যেখানে সরকারি কর্মচারীদের বাসভবন,সেমিনার কক্ষ,গ্যারেজ,পাঠাগার,সুপরিসর ফুলের বাগানসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে শোলাকিয়া ঈদগাহের স্থান সংকোচন,প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য,ভাব-গাম্ভির্য ও মর্যাদা নষ্ট করার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও বেদনাদায়ক। আমরা যারা বংশ পরম্পরায় এই মাটিতে বেড়ে উঠেছি,আগামী প্রজন্মের কাছে নিজেদেরকে যাতে অপরাধী মনে না হয়,সেই জায়গা থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে যৌক্তিক লড়াই করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এরকম অযৌক্তিক এবং ঐতিহ্যবিনাশী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য করতে চাই।শেখ সেলিম কবির আরো বলেন,শোলাকিয়া মাঠ ঐতিহ্যবাহী হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাতের স্থান হিসেবে,মসজিদ হিসেবে নয়।ওয়াকফ প্রদানকারীগণ এই মাঠ ঈদগাহ হিসেবে দান করেছেন,মসজিদ হিসেবে নয়।রাসূল(সা:) ও সাহাবীগণ ঈদের নামায খোলা মাঠে পড়েছেন,তাই খোলা মাঠে নামায পড়া সুন্নত ও অধিক সওয়াব।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি হল উল্লেখিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী উপযুক্ত খাস জমি নির্বাচন করা,যদি কোন কারণে খাস জমি পাওয়া না যায় তবে সরকারি বিধি মোতাবেক ৪০ শতাংশ জায়গা অধিগ্রহণের মাধ্যমে ক্রয় করে কমপ্লেক্স নির্মাণ করা।এ সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবার পরেও কার স্বার্থে,কে বা কারা এরকম কাণ্ডজ্ঞানহীন কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা আমাদের খুজে বের করা দরকার।তা ছাড়া এই সিদ্ধান্ত কাদের মাধ্যমে,কিভাবে,কোন তারিখের,কোন সভার আলোকে নেয়া হয়েছে,সেই সভার কার্যবিবরণী কপি অনধিক আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি,কিশোরগঞ্জ জেলার মাননীয় সংসদ সদস্যদের নজরে আনবার জোর দাবী জানান সংবাদ সম্মেলন থেকে।সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) মহামান্য রাষ্ট্রপতি, জেলার সম্মানীত সকল জাতীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করা,এ আন্দোলনে গণসম্পৃক্ততা প্রমাণের জন্য গণস্বাক্ষর অভিযান,স্থানীয় বুদ্ধিজীবি,শিক্ষাবিদ,সুধীজন ও আলেম সমাজের সাথে মত বিনিময় এবং শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন,সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ কিশোরগঞ্জ এর আহবায়ক শেখ সেলিম কবির।এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের মিয়া,মাওলানা ইলিয়াস আমিনী,মাওলানা আবুল কাশেম জিহাদী,প্রফেসর মাওলানা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম,প্রবীণ শিক্ষক আবু খালেক পাঠান,আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মোকাররম হোসেন শোকরানা,বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি সাইফউদ্দিন আহমেদ লেলিন,ব্যাবসায়ী কামরুল হাসান মুকুল প্রমুখ।