আশরাফুল ইসলাম তুষার: শীত জেঁকে বসার আগেই কিশোরগঞ্জ শহরে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে। ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন লেপ-তোষক তৈরির দোকানে। আর তাই লেপ-তোষক তৈরিতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন কিশোরগঞ্জের কারিগররা। জেলার ছোট বড় লেপ তোষক প্রস্তুতকারী বিভিন্ন দোকান মালিক, শ্রমিক, ধুনাইকার এখন তুলা ধুনায় ও লেপ-তোষক তৈরি ও সেলাই এর কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।কারিগররা বলছেন, দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বেশি বাড়ার আশঙ্কায় শহরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ নতুন লেপ-তোষক তৈরি করছে। বছরে অন্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি লেপ তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন বলে কারিগররা বলেন। লেপ-তোষক ব্যবসায়ী চরশোলাকিয়া রেলগেইট সংলগ্ন বিল্লাল বেডিং স্টোর এর স্বত্বাধিকারী মো:বিল্লাল মিয়া জানান,এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রচুর লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। কাজ সামাল দিতে অতিরিক্ত কারিগরও রাখতে হচ্ছে। তারা চেষ্টা করছেন সাধ্য মত সঠিক সময়ে গ্রাহকদের কাছে পণ্য ডেলিভারি দিতে।এছাড়াও অর্ডার নেওয়ার পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ-বালিশ ও তোষক বানিয়ে রেখেছি।ক্রেতা সাধারণের কাছে এসব রেডিমেট হিসাবে বিক্রি করে থাকি।লেপ-তোষক তৈরির কারিগর সুজন,বাবুল ও সুমন জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা কাজ করছে দোকানগুলোতে দেখা গেছে কেউ তুলা ধুনছে, কেউ সেলাই করছে, কেউ কাপড় কাটছে। সব মিলিয়ে দোকানে কেউ বসে থাকছে না।ক্রেতারা বলছেন,অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তুলার দাম একটু বেশি,যে কারণে তৈরি করতে দাম বেশি নিচ্ছে। ঋতু বৈচিত্র্যে শীতের শুরুতেই রাতে কুয়াশা আর দিনেহাল্কা গরম থাকলেও ঠান্ডার প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ঠাণ্ডা নিবারণে এ অঞ্চলের মানুষের প্রস্তুতি চলছেও পুরোদমে। কিশোরগঞ্জ জেলাটি হাওরবেষ্টিত হওয়ায় শীতকালে এ অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। প্রতি বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ঠাণ্ডা নিবারণের জন্য লেপ-তোষক বানিয়ে মানুষের আগাম প্রস্তুতি চলছে। আর এ সুযোগে পশরা সাজিয়ে বসেছেন পুরাতন কাপড়ের দোকানীরাও। পুরাতন কাপড়ের দোকানেও ক্রেতারা ভীড় করছেন। শহরের লেপ-তোষক তৈরীর দোকান গুলোতে গিয়ে দেখা যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। অনেকে পুরাতন লেপের তুলা বদলিয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করে নিচ্ছে। লেপ-তোষক বানাতে আসা ক্রেতা এখলাছুর রহমান বলেন,‘শীত পড়লে ঝমেলা হয়, তাই আগাম লেপ-তোষক বানাচ্ছি।’লেপ তোষক প্রস্তুতকারী মো:বিল্লাল মিয়া বলেন,দোকানে প্রতিটি লেপ-তোষক বানাতে মজুরী হিসেবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আর জাজিম ৪০০ টাকা খরচ হয়। বর্তমান বাজারে গার্মেন্টস ঝুট দিয়ে তোষক তৈরিতে ১ হাজার থেকে ১২শত আর জাজিম ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা খরচ পড়ে। তাছাড়া কার্পাস তুলা দাম বেশি হওয়ায় অনেকে গার্মেন্টসের তুলা দিয়ে লেপ তৈরি করে থাকেন। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম থাকায় চাহিদাও বেশি থাকে।বিল্লাল মিয়া আরো বলেন,বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী হুমায়ুন মিয়ার সাহায্য সহযোগীতায় লেপ তোষক তৈরীর করে আজ আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। ৩ ছেলেমেয়েকে পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে সংসারের হাল ধরে আছি এ ব্যবসা থেকেই।