লক্ষ লক্ষ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে, দেশের প্রখ্যাত আলেম বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতিব ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মহাপরিচালক,আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ’র জানাজার নামাজ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে সম্পূর্ণ হন।
বৃহস্পতিবার(৩০ জানুয়ারি) জোহরের নামাজের পর ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম গনের উপস্থিতিতে আল্লামা হযরত মাওলানা আনোয়ার শাহ জানাজার নামাজ।
জানাজার নামাজের পর তাঁকে শোলাকিয়া নূরানী বাগে জান্নাত কবরস্থানে সমাধি করেন।
উল্লেখ্য,রাজধানীর ধানমণ্ডির শঙ্করে অবস্থিত ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকাল ৫টার কিছু পরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। ভেন্টিলেশনে কৃত্রিম উপায়ে বাইরে থেকে মেশিনের সাহায্যে তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখার চেষ্টা করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা এ আলেমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার আরো অবনতি হলে তাঁকে ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউ’তে নেয়া হয়।
ডা. তাহসিন সালামের তত্বাবধানে থাকা আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ এর শারীরিক অবস্থা মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ভোর রাতে সংকটাপন্ন অবস্থায় উপনীত হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া’র (বেফাক) সহ-সভাপতি, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ-এর মুহতামিম।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে যান। ব্যাংককের ফাইয়া থাই নওয়ামী ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালে তিনি শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা নেন।
ব্যাংককে চিকিৎসা শেষে দুই মাস ৩ দিন পর গত ১৪ ডিসেম্বর আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ দেশে ফিরেন।
হঠাৎ করেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতিব। দীর্ঘদিন সিলেটের হজরত শাহজালাল দর্গা মসজিদের খতিব হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর চমৎকার তিলাওয়াত, শুদ্ধ বাংলা ও সাবলীল আলোচনায় মুগ্ধ হয় দেশের কোটি তৌহিদী জনতা। দেশে-বিদেশে রয়েছে তাঁর অসংখ্য ছাত্র ও ভক্ত।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদে কিশোরগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।