রে’নু মিয়া পেশায় একজন রং মিস্ত্রি। প্রায় ২০ বছর ধরে অন্যের ঘর রাঙিয়ে তুলছেন রং-তুলির আঁচড়ে। কিন্তু নিজের ঘর-সংসার রাঙাতে পারেননি আজও। ছোট্ট টিনের ঘরের একটি কক্ষে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকেন গাদাগাদি করে। মাসে যে টাকা আয় করেন তাতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে না পারলেও মুখে হাসি ছিল।
কি’ন্তু রে’নু মিয়ার পরিবারের সেই হাসিমাখা মুখ মলিন করে দিয়েছে করোনাভাইরাস।গতকাল বুধবার (২০ মে) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের ভাদুরঘর এলাকায় রেনু মিয়ার বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঈদ উপহার হিসেবে পাওয়া আড়াই হাজার টাকা পেয়ে রেনু মিয়ার মুখে বিশ্বজয়ের হাসি!রেনু মিয়া জানান, রং মিস্ত্রির কাজ করে প্রতিমাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।এ টাকা দিয়েই চলে তার সংসার। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকেন টিনের ঘরে।
ঘ’রটিতে থাকা দুইটি কক্ষের মধ্যে একটি তার, আরেকটি তার ভাইয়ের। গাদাগাদি করেই থাকতে হয় সেখানে। তবে স্ত্রী-সন্তানদের বিলাসবহুল জীবন দিতে না পারলেও অল্প আয়েও সংসারে সুখ ছিল তার।প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার দিনই রেনু মিয়ার মুঠোফোনের নগদ হিসাব নম্বরে চলে আসে কাঙ্খিত আড়াই হাজার টাকা।
এ টা’কা পেয়ে বিশ্বজয়ের হাসি ফোটে রেনু মিয়ার মুখে। ওইদিনই টাকা উত্তোলন করে চলে যান বাজার-সদাই করতে।রেনু মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর টাকা পেয়ে বাজারে গিয়ে চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজের সাথে মাছও কিনেছেন তিনি। ঈদের কিছু বাজার-সদাইও করেছেন এ টাকা দিয়ে।এছাড়া অসুস্থ শিশু সন্তানের ওষুধও কিনেছেন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের টাকায়।
এ’খন আরও ৩০০ টাকা আছে হাতে। এ টাকা দিয়ে চলবেন আরও কয়েকদিন। করোনার এ দুর্যোগে কর্মহীনদের জন্য উপহার পাঠানোয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়েপড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ঈদ উপহার হিসেবে নগদ দুই হাজার ৫০০ টাকা করে দিচ্ছেন।
এ’জন্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক এবং সমাজের গণমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে।তালিকা অনুযায়ী সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবারকে দেয়া হচ্ছে ঈদ উপহার। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৭৫ হাজার পবিারকে দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। উপহারের তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ১১ হাজার ৯৩২টি পরিবার রয়েছে।
ব্রা’হ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যেন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পায় সেজন্য আমরা সতর্কতার সঙ্গে তালিকা প্রণয়নের কাজ করছি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রাপ্ত তালিকাগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।