আ’মেরিকায় পু’লিশি নি’র্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হ’ত্যার পর সারা দেশ জুড়ে যে প্র’তিবাদ-বি’ক্ষো’ভ শুরু হয়েছে – সেই পটভূমিতে সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রে’ন্ড করতে শুরু করেছে হ্যাশট্যাগ ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’।
ঠি’ক সেই আ’দলে ভারতেরও বহু অ্যাক্টিভিস্ট, শিক্ষাবিদ ও স’মাজকর্মী এখন আওয়াজ তুলছেন ‘মু’সলিম লাইভস ম্যাটার’ – অর্থাৎ মু’সলিমদের জীবনেরও দাম আছে।
ভারতে গ’ত কয়ে’ক বছরে মু’সলিমরা যেভাবে বারবার হা’মলা ও গণপি’টুনির শি’কার হয়েছেন, সে কারণেই এই ডাক এখন প্রাসঙ্গিক বলে তাদের বক্তব্য – যদিও এর ফলে তাদের ভারতের দক্ষিণপন্থী ও জা’তীয়তাবা’দী গোষ্ঠীগুলোর তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে।
আমেরিকার মি’নিয়াপোলিসের আ’ফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড এবং বছরপাঁচেক আগে ভারতে দিল্লির কাছে দাদরিতে মহম্মদ আখলাক যেভাবে মা’রা গেছেন – তা’র মধ্যে আপাতদৃষ্টিতে হয়তো কোনও মিল নেই।
কিন্তু ভার’তের বে’শ কয়েকজন নামীদামী অ্যাক্টিভিস্ট মনে করছেন এই দুটো হ’ত্যায় কিছুটা সাদৃশ্য আছেও। তারা বলছেন, জর্জ ফ্লয়েড যেমন প্রকাশ্য পুলিশি নি’র্যাতনে মা’রা গেছেন, তেমনি ভারতেও পুলিশ ও প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন মদতে মু’সলিমদের তুচ্ছ অ’জুহাতে পি’টিয়ে মা’রা হচ্ছে গত বেশ কয়েক বছর ধরেই।
আর ঠিক এই জ’ন্যই ভা’রতের প্রেক্ষাপটে তারা এখন আওয়াজ তুলছেন “মু’সলিম লাইভস ম্যাটার”।দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেই তারা কাশ্মীরের বিশেষ স্বীকৃতি কেড়েছেন, ভে’ঙে ফেলা বাবরি মসজিদের জায়গায় বিশাল মন্দির বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এবং প্রতিবেশী দেশের নি’র্যাতিতদের নাগরিকত্ব পর্যন্ত দিচ্ছেন – শুধু মু’সলিমদের ছাড়া।”
প্র’তিবাদটা আ’গেই হওয়া উচিত ছিল’
মুম্বাইতে সমাজতাত্ত্বিক ও অধ্যাপক শাওনি শবনম আবার মনে করেন, ভারতে মু’সলিমদের জীবন বিপন্ন – এটা কোনও নতুন কথা নয়। কিন্তু মু’সলিমদের জীবনেরও দাম আছে, হ্যাশট্যাগের মধ্যে দিয়ে সেই উপলব্ধিটা আসতে আমেরিকায় জর্জ ফ্লয়েডের মৃ’ত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল, সেটাই তাঁর মতে বরং দু:খের।
ড: শবনম বল’ছিলেন, “এ’ই প্র’তিবাদ তো অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। যে স’রকার এখন দেশের ক্ষমতায়, তারা হয়তো দ্বিতীয়বার জিতে আসতেই পারত না যদি এই সচেতনতা আমাদের আগে আসত।
”আমেরিকাতে এ’খন প্র’তিবাদ হচ্ছে বলেই সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আমাদের কথাটা এখন বলব, এই যুক্তিটা আমার ঠিক পছন্দ নয়।”ড: শবনম অবশ্য সেই স’ঙ্গেই বলছেন অনেক দেরিতে এলেও এই আওয়াজকে তিনি স্বাগতই জানাবেন – কারণ এটার ভীষণ দরকার আছে।
ভারতে অ’নেক পর্যবেক্ষক আবার পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন আমেরিকা ও ভারতের বাস্তবতা ও ইতিহাস সম্পূর্ণ আলাদা – এবং একটা দেশের জাতিগত বৈষম্য ও বর্ণবাদের সঙ্গে অন্য দেশের ধর্মীয় বিভাজন ও অসহিষ্ণুতার তুলনা টানা যায় না।
সে’টা হ’য়তো আংশিকভাবে ঠিক, কিন্তু তারপরও আমেরিকায় উত্তাল প্র’তিবাদের এই সময়ে ভারতেও মু’সলিমদের বাঁচার দাবি যে নতুন করে উঠতে শুরু করেছে তাতে কোনও স’ন্দেহ নেই।