তিন ব’ছর আগে বাবা মা’রা যাওয়ার কয়েকদিন পর মা হারিয়ে যায়। শিশু বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসানের (১৮) কষ্টের জীবন কাটে। বিভিন্ন স্থানে মাকে খুঁ’জে ফিরে মেহেদী। মায়ের খবর পেলেই ছুটে গেছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। অবশেষে তিন বছর পরে বৃহস্পতিবার রাতে শরণখোলার তাফালবাড়ি
বাজারের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে খুঁজে পায় মানসিক ভারসাম্যহীন অ’বস্থায় মা মেরিনা বেগমকে (৪৮)। দীর্ঘদিন পরে মাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ছেলে। রাত ৯টার দিকে ওই নারীকে শরণখোলা প্রেস’ক্লাবে নিয়ে এলে সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছেলের কাছে থাকা মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, পিরোজপুর জে’লার নেছারাবাদ উপজে’লার গগণ গ্রামে মেরিনা বেগমের
বাড়ি। স্বামীর নাম জাহা’ঙ্গীর হোসেন। ১৯৭২ সালের ২জুলাই তার জন্ম। ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, দিনমজুর বাবা মা’রা যাওয়ার পর থেকেই মা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তাদের তিন ভাইবোনকে রেখে হঠাৎ একদিন মা নিখোঁজ হয়। বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় খুঁজেছি। ছয়মাস আগে আমা’দের এলাকার পরিচিত এক ব্যবসায়ী শরণখোলায় এসে মায়ের মতো
একজনকে দেখেছেন বলে জানান। খবর পেয়ে ওই সময়ও এসেছিলাম কিন্তু মাকে পাইনি। তখন তাফালবাড়ি বাজারের বাদল হাওলাদার নামের এক জুতার দোকানদারকে আমা’র মোবাইল নম্বর ও মায়ের ছবি দিয়ে গেছিলাম সন্ধান পেলে জানাতে। তিনি-ই মাকে দেখে আট’কে রেখে আমা’দের খবর দেন। পরে মামা মিন্টু বেপারীকে নিয়ে মায়ের কাছে আসি। ওই ব্যবসায়ীর কারণে আজ আমা’র মাকে ফিরে পেয়েছি। সন্ধানদাতা তাফালবাড়ি বাজারের জুতার ব্যবসায়ী মো. বাদল
হাও’লাদার বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে ওই নারীকে তাফালবাড়ি বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখি। মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও কখনও উ’চ্ছৃঙ্খল আচর করতে দেখিনি তাকে। প্রায়-ই আমা’র দোকানের সামনে এসে হাত পেতে দাঁড়িয়ে থাকতো। দু-এক টাকা দিলে চলে যেতো। ছেলের কাছে তার মাকে ফিরিয়ে দিতে পেরে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে। মেরিনা বেগমর’ে ভাই মো. মিন্টু বেপারী হারিয়ে যাওয়া বোনকে ফিরে পেয়ে খুবই আনন্দিত। তিনি শরণখোলাবাসী প্রতি কৃ’তজ্ঞতা প্রকাশ করেন।