এজি লাভলু, স্টাফ রিপোর্টার
করোনাভাইরাস যখন ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে তখন “Corona Update Kurigram করোনা আপডেট” নামে এই ফেসবুক গ্রুপটির যাত্রা শুরু ২০ মার্চ-২০২০ ইং। উদ্দেশ্য একটাই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
দেশের এবং বিদেশের যে প্রান্তেই কুড়িগ্রামের মানুষ আছেন সকলেই যুক্ত হচ্ছেন গ্রুপে। বাড়াচ্ছেন সহযোগিতার হাত। সমস্যায় বসে না থেকে সচেতনতা গড়ে তোলা, সম্মিলিতভাবে কাজ করাই লক্ষ্য গ্রুপের। আর এর কার্যক্রম দেশের অন্যান্য জেলাও অনুসরণ করতে পারে। কিভাবে ইচ্ছা থাকলেই মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, কাজ করা যায় মহামারি মোকাবিলায়।
এই গ্রুপটি কুড়িগ্রাম জেলার সকলের অনুপ্রেরণার, আস্থার স্থান হয়েছে আর বাংলাদেশের মধ্যে একটি রোল মডেলে পরিনত হয়েছে তাদের কাজের মাধ্যমে।
“Corona Update Kurigram – করোনা আপডেট কুড়িগ্রাম” এই গ্রুপটি কুড়িগ্রামবাসীর সকলের। চেস্টা করেছে সকল দিক খেয়াল রাখতে। এখন পর্যন্ত যে সকল পদক্ষেপ গ্রহন করেছেঃ
০১। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা টেলি মেডিকেল সার্ভিস ২৪x৭।
০২। ফ্রি এম্বুলেন্স সার্ভিস ২৪x৭।
০৩। ফ্রি ইমার্জেন্সি মেডিসিন ডেরিভারি।
০৪। প্লাজমা ব্যাংক তৈরি করা।
০৫। ফ্রি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাসায় পৌছায় দেয়া।
০৬। শিক্ষাথিদের জন্যে ফ্রি ভার্চুয়াল কোচিং ব্যাবস্থা করা ।
০৭। সুসাস্থের জন্যে লাইভ ইয়োগা সেশন।
০৮। ইসলামিক স্কলারদের নিয়ে সচেতনাতা মুলক লাইভ প্রোগ্রাম করোনা।
০৯। সচেতনামূলক পোস্টার , মাইকিং, মাস্ক , সাবান, লিফলেট বিতরণ।
১০। সচেতনতা গড়ে তুলতে লাইভ প্রোগ্রাম।
১১। মানসিক সুস্থতা রক্ষাতে লাইভ মিউজিক।
১২। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যে খাবারের ব্যাবস্থা চাল বিতরণ ।
১৩। নিম্ন মমধ্যবিত্ত মানুষের জন্যে ঘরের দরজার সামনে খাবার দেয়া।
১৪। মানুষের ইফাতারীর ব্যাবস্থা করা।
১৫। নিম্ন আয়ের পরিবারে ত্রান বিতরণ।
১৬। লক ডাউন পরিবারে গুলোর মাঝে ত্রান বিতরণ।
১৭। নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে ৫০০, ৩০০ টাকা বিতরণ।
১৮। ঢাকায় আটকায় পরা রিকসা চালক ভাইদের জন্যে ৫০০, ১০০০, ১৫০০ টাকা বিতরণ ।
১৯। সচেতনতার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেয়ার করা।
২০। গ্রুপের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে যে কোন যায়গায় জন সমাগম প্রতিরোধ করা।
২১। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা।
২৩। করোনা টেস্ট করতে অনেকেই ভয় পায় , তাই তাদের টেস্ট করাতে হট লাইন এর মাধ্যমে তথ্য নিয়ে তাদের টেস্ট করার ব্যাবস্থা করা ।
২৪। মানবতার হুইল চেয়ার বিতরণ।
২৫। জীবাণুনাশক টার্নেল তৈরি।
২৬। ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, বিপি মেশিন, সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ।
২৭। করোনা আক্রান্ত মানুষের মানুসিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য টেলি সেবা দেয়া এবং তাদের সাথে ঈদ উদযাপন করা।
২৮। কুড়িগ্রাম জেলার সকল হাসপাতালে পিপিই প্রদান।
২৯। শ্মশান ও গোরস্থানের কর্মকর্তাদের মাঝে পিপিই প্রদান।
সামনে আরো বড় পরিশরে কয়েকটি প্রজেক্ট তারা হাতে নিয়েছেন যেখানে ২০ থেকে ২৫ হাজার অসহায় মানুষের উপকৃত হবে।
এছাড়াও এই গ্রুপের মাধ্যমে সামাজিক সমাস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়েছে । কিছু দিন আগে জিয়া বাজারে এক্সিডেন্ট এ নিহিত রিকসা চালকের পরিবারের দায়িত্ত গ্রহণ , গ্রুপে যারাই সাহায্যে চেয়েছেন তাদের ১০০% সামস্যা সমাধান করা, বিভিন্ন যায়গায় জন সমাগাম প্রতিরোধ , বিভিন্ন সময়ে গুজবে কে সঠিক তথ্য দিয়ে তা প্রতিরোধ করা ।
এই গ্রুপের মাধ্যমে সকলের মাঝে যেমন সচেতনাতা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে, ঠিক তেমনি সকলকে একই প্লাট ফর্মে এনে সামাজিক কাজে উৎসাহিত করা সম্ভব হয়েছে । সকলেই মিলে আমরা, এই ভাবেই কুড়িগ্রামের মত দরিদ্র এলাকায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে করোনার জন্যে সকল প্রস্তুতি । এক দিকে সচেতনা গড়ে তোলা, আরেক দিকে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানো , আরেক দিকে স্বাস্থ্য চিকিৎসা, খাদ্য ব্যাবস্থা । এই গ্রুপ আমার , তোমার কারো নয়, এই গ্রুপ কুড়িগ্রামের, এই গ্রুপ এখন সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্যে হয়েছে ।
নেপথ্যের কারিগর
বিপাশা রহমান, ডাঃ শাহ আহসানুল ইমরান, নিলয় এম রেদোয়ান, হাসানাত কানন, জাহিদুল ইসলাম জীবন, শফিকুননবি বায়জিদ, হৃদয় বিশ্বাস, নাসিরুল সুজন, আতিফ ইফতেসাম, ইসরাক চৌধুরী স্বচ্ছ , ডাঃ অমিত সরকার, মো. সাকিউল ইসলাম বাপ্পি, ইয়াসির আরাফাত প্লাবন, নবনী চৌধুরী, আতিয়া আনুলি, মো. নাজমুস সাকিব, আবু সাইদ, আশরাফুল আলম, ফারুক বসুনিয়া, এস এম তৌহিদুল, পল্লব , হোসেইন মারুফ, আল ফারাবী, জর্জ , তনু , এজি লাভলু, শাহ আজিজ ইমন, আতিক বিন শামসুদ্দিন, যাকারিয়া হোসেইন বাধন, এস আর সোহাগ, এবং চৌধুরী তানভীর ইসলাম (অন্তু) প্রমুখ।